প্রায়শ: ই দেখা যায় যে, বাসায় দু’টো কম্পিউটার আছে এবং ইন্টারনেট কানেকশনও দু’টো। এর কোন মানে হয়? আজ আপনাদের এমন ধারণা দিব যা দিয়ে আপনি বিশাল বড় ইন্ডাষ্ট্রিও একটা নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে পারবেন খুব সহজেই। হোক সেখানে ১০০০ কিংবা ১০,০০০ যত ইচ্ছা তত কম্পিউটার। এমনকি আপনার একটা ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে যত ইচ্ছে তত কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে রাউটার ব্যবহার করলে ভাল হয়। ধরুন- আপনার ইন্টারনেট কানেরকশনের স্পীড 64KBPS (1 KB = 8kb সুতরাং 64 KB x 8 kb = 512kbps) এবং এই কানেকশনটিকে আপনি রাউটার ছাড়াই ১০টা কম্পিউটারে শেয়ার করলেন।
এখন কম্পিউটার-০১ যদি কোন কিছু ডাউনলোড দেয় তাহলে কম্পিউটার-০২ থেকে কম্পিউটার-১০ পর্যন্ত কেউ ভাল ভাবে ব্রাউজই করতে পারবে না। কারণ কম্পিউটার-০১ এর ডাউনলোড আপনার কানেকশনটির প্রায় ৯৫% স্পীডই ব্যবহার করছে। অর্থাৎ, আপনার স্পীড রাউটার ছাড়া নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন না। যাই হোক, মূল কাজে চলে যাই।
মনেকরছি, আমি ফারদিন এবং আমি কিউবি ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করছি। আমি ৪টা পিসিকে একটা নেটওয়ার্কের আওতায় আনব। আমার কিউবি মডেমটি বড় যেটা থেকে ইন্টারনেট কানেকশন কম্পিউটারে নিতে হলে ল্যান কার্ডের প্রয়োজন হয়। কিউবির আরো মডেম আছে যা ব্যবহার করতে ল্যান কার্ডের প্রয়োজন নেই; যেমন- ডন্জেল মডেম (এটি USB Port এ ব্যবহৃত হয়)। গ্রামীনফোন থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক মডেমই আছে যা USB Port এ ব্যবহৃত হয়। আমারটা যেহেতু USB Port এর না তাই আমার দু’টো ল্যান কার্ড এর প্রয়োজন হবে আমার ইন্টারনেট কানেকশনটি শেয়ার করার জন্য। যারা USB Port এর মডেম ব্যবহার করেন তাদের একটি ল্যান কার্ডেই যথেষ্ট। নিম্নে আমার কম্পিউটারের চিত্র দিয়েছি-
এখন ল্যান-০২ এর তার গিয়ে প্রবেশ করবে সুইচে। ও হ্যাঁ, নেটওয়ার্কির এবং শেয়ারিং করতে হলে আপনার অবশ্যই সুইচের প্রয়োজন হবে। বাজারে টিপি লিংকের ৫ পোর্ট এর সুইচের বর্তমান দাম মাত্র – ৬০০/- টাকা । তাহলে, আমার ল্যান-০১ হল কিউবি ইন্টারনেট মডেমের তার এবং ল্যান-০২ হল নেটওয়ার্কিং এর তার যা সুইচে প্রবেশ করবে। নিম্নে আমি পুরো মডেলটি এঁকে দিলাম বুঝার সুবিধার্থে-
আমি ধরে নিলাম, আমার যে পিসিতে ইন্টারনেট মডেম লাগানো আছে সেটি সার্ভার পিসি। ঠিক উপরের চিত্রের মত করেই ইন্টারনেটের ক্যাবল সবগুলো পিসিতে সংযুক্ত হবে যতগুলো পিসিকে আপনি একটা নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে চান এবং ইন্টারনেট শেয়ার করতে চান।
তাহলে, ক্যাবল সেটিং এর কাজ সমাপ্ত। এখন কনফিগারেশন এর কাজ শুরু করি চলুন-
সার্ভার পিসি’র নেটওয়ার্কিং মেনুতে গেলাম ঠিক এই ভাবে- My network place —> Properties ( For Win7: Networking & Sharing Center —> Change adapter settings)। My network place মেনু ওপেন হলে সেখানে আমি দেখতে পাচ্ছি নিম্নের মত একটি চিত্র-
উপরের চিত্রে লক্ষ্য করুন- দু’টো আইকন। কারণ, একটি হল আমার ইন্টারনেট কানেকশনের ল্যান-০১ এবং অন্যটি আমার নেটওয়ার্কিং এর ল্যান। “Local area connection” নামে যে আইকনটি আছে দেখুন সেটি দেখাচ্ছে- “Connected, Shared”। এটি আমার ইন্টারনেট কানেরশনের আইকন তাই এই ল্যানটিকে আমি শেয়ার করেছি। আপনিও করে নিন ঠিক এই ভাবে-
ঠিক ওই আইকনটিতে রাইটক্লিক করুন যেটি আপনার ইন্টারনেট কানেকশনের আইকন। Right click —>Properties —> Advance এবং নিচের চিত্রটি দেখুন পরিষ্কার হয়ে যাবে-
যদি অন্যান্য ব্যবহারকারীগণকে আপনি ডায়নামিক আইপি দিয়েই ব্যবহার করাতে চান অর্থাৎ ল্যান কার্ডে কোন আইপি এড্রেস দিতে চান না তাহলে অন্যান্যদের ল্যান কার্ড কনফিগারেশনের দরকার নেই।
আমি যেহেতু কিউবির ডিএনএস ( কিউবির ডিএনএস জানতে আপনি আপনার আইপি ব্রাউজ করুন – ১৯২.১৬৮.৩.১ এবং ষ্ট্যাটাস মেনুতে ক্লিক করে “ইন্টারনেট” এ ক্লিক করুন। সব তথ্য পেয়ে যাবেন) জানি তাই, আমি আমার ল্যান-০২ কে কনফিগার করে নিলাম। নিজের মত করে একটা আইপি এড্রেস দিলাম।
আমি কম্পিউটার-০২ এর ল্যান কনফিগার করলাম এভাবে- আইপি এড্রেস দিলাম ১৯২.১৬৮.০.২ তারপর ট্যাব বাটনে প্রেস করলাম। সাবনেট মাস্ক তৈরী হয়ে গেল। ডিফল্ট গেটওয়ে দিলাম আমার সার্ভার পিসিতে যে আইপিটি ব্যবহার করেছি। ১৯২.১৬৮.০.১০০। এবং ডিএনএস যা আছে সার্ভার পিসির মত করেই দিলাম।
এভাবে আমি প্রত্যেকটা পিসির ল্যানকে কনফিগার করলাম। ব্যাস, আমার কাজ সমাপ্ত। এখন সব পিসিতেই ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারছি। এখন আমি চাইলে যেকোন পিসির ফাইল যেকোন পিসিতে অনায়াসে নিতে পারব শেয়ারিং দিয়ে। যেকোন ফাইলে রাইটক্লিক করে প্রোপার্টিজ থেকে শেয়ারিং মেনু এবং সেখানে এলাও করে দিলাম চেক বক্সে ক্লিক করে।
আপনাদের যদি কোথাও কোন সমস্যা হয় দয়া করে আমাকে মন্তব্যে জানাবেন। আর ভুল হলে সংশোধনে সাহায্য করে বাধিত করবেন। ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন